অনুসন্ধান ফলাফলগুলি - Clinton, Bill
বিল ক্লিনটন

ক্লিনটনের জন্ম ও বেড়ে ওঠা আর্কানসাসে। তিনি ১৯৬৮ সালে জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হন। পরে ইয়েল ল স্কুল থেকে আইনে ডিগ্রি নেন; সেখানেই তিনি তার ভবিষ্যত স্ত্রী হিলারি রডহ্যামের সাথে পরিচিত হন। আইন স্কুল শেষে তিনি আর্কানসাসে ফিরে আসেন এবং প্রথমে অ্যাটর্নি জেনারেল, পরে টানা দু'দফায় (কিন্তু একটানা নয়) রাজ্যপাল নির্বাচিত হন। রাজ্যপাল থাকাকালীন তিনি আর্কানসাসের শিক্ষাব্যবস্থায় বড় রকমের সংস্কার আনেন এবং ন্যাশনাল গভর্নরস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
ক্লিনটন ১৯৯২ সালের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান রাষ্ট্রপতি জর্জ এইচ. ডব্লিউ. বুশ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী রস পেরটকে হারিয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। তিনি "বেবি বুমার" প্রজন্মে (দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী শিশুসমৃদ্ধ যুগ) জন্ম নেওয়া প্রথম রাষ্ট্রপতি এবং দুই মেয়াদ পূর্ণ করা সর্বকনিষ্ঠ রাষ্ট্রপতি। তার শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্র শান্তিকালের ইতিহাসে দ্বিতীয় দীর্ঘতম অর্থনৈতিক উন্নতি দেখে। তিনি উত্তর আমেরিকা মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (নাফটা) এবং সহিংস অপরাধ নিয়ন্ত্রণ আইন স্বাক্ষর করেন, কিন্তু জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা সংস্কার পরিকল্পনা পাস করাতে ব্যর্থ হন। ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে তার নীতিতে রক্ষণশীলতার ছাপ পড়তে শুরু করে। তিনি ব্যক্তিগত দায়িত্ব ও কর্মসংস্থান আইন, শিশু স্বাস্থ্য বীমা কর্মসূচি এবং আর্থিক নিয়ন্ত্রণ শিথিলকরণের পক্ষে ওকালতি করেন ও সেগুলোতে স্বাক্ষর করেন। তিনি রুথ বেডার গিন্সবার্গ ও স্টিফেন ব্রেয়ারকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগ দেন। বৈদেশিক নীতিতে, বসনিয়া ও কসোভো যুদ্ধে মার্কিন সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং শেষপর্যন্ত ডেটন শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করেন। তিনি পূর্ব ইউরোপে ন্যাটোর সম্প্রসারণেরও আহ্বান জানান; তার শাসনামলে ওয়ারশ চুক্তিভুক্ত অনেক দেশ ন্যাটোতে যোগ দেয়। মধ্যপ্রাচ্যে তিনি ইরাক লিবারেশন অ্যাক্ট স্বাক্ষর করেন, যা সাদ্দাম হুসেইনের বিরোধীদের সাহায্য দেয়। এছাড়াও তিনি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তি প্রক্রিয়ায় অগ্রগতির জন্য ওসলো-১ চুক্তি ও ক্যাম্প ডেভিড শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেন এবং উত্তর আয়ারল্যান্ড শান্তি প্রক্রিয়ায় সহায়তা করেন।
ক্লিনটন ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী বব ডোল ও রিফর্ম পার্টির রস পেরটকে হারিয়ে পুনর্নির্বাচিত হন। দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি স্থায়ী স্বাভাবিক বাণিজ্য সম্পর্কের প্রচলন করেন। কিন্তু তার দ্বিতীয় মেয়াদের সাফল্যগুলো ক্লিনটন-লেউইনস্কি কেলেঙ্কারির আড়ালে ঢাকা পড়ে যায়। ১৯৯৮ সালের শুরুতে জানা যায়, তিনি প্রায় আঠারো মাস ধরে হোয়াইট হাউসের ইন্টার্ন মনিকা লেউইনস্কির সাথে যৌন সম্পর্কে জড়িত ছিলেন। এই কেলেঙ্কারি বছরের শেষ দিকে তীব্র আকার ধারণ করে এবং ডিসেম্বরে ক্লিনটন হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস দ্বারা অভিশংসিত (Impeached) হন। এনড্রু জনসনের পর তিনিই হলেন অভিশংসনের সম্মুখীন হওয়া প্রথম মার্কিন রাষ্ট্রপতি। হাউস যে দুটি অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে অভিশংসন করে তা হল মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া (পেরজুরি) এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ব্যবহার করে বিচার প্রক্রিয়ায় বাধা দেওয়া (অবস্ট্রাকশন অব জাস্টিস)। জানুয়ারি ১৯৯৯-এ সিনেটে তার অভিশংসন বিচার শুরু হয় এবং দুই মাস পরে উভয় অভিযোগ থেকে তিনি খালাস পান। ক্লিনটনের রাষ্ট্রপতিত্বের শেষ তিন বছরে কংগ্রেসনাল বাজেট অফিস বাজেট উদ্বৃত্তের (সারপ্লাস) খবর দেয়— যা ছিল ১৯৬৯ সালের পর প্রথম ও একমাত্র বাজেট উদ্বৃত্ত।
ক্লিনটন ২০০১ সালে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব ছাড়েন; তখন তার জনপ্রিয়তার হার ছিল যেকোনো মার্কিন রাষ্ট্রপতির মধ্যে সর্বোচ্চ যৌথ স্থানে। ইতিহাসবিদদের র্যাঙ্কিংয়ে তার রাষ্ট্রপতিত্ব মাঝারি থেকে উঁচু স্তরের মধ্যে স্থান পায়। তবে তার ব্যক্তিগত আচরণ ও কেলেঙ্কারির অভিযোগ তাকে ব্যাপক সমালোচনার মুখে ফেলে। রাষ্ট্রপতিত্ব ছাড়ার পর তিনি জনবক্তৃতা ও মানবিক কাজে জড়িত হন। তিনি এইচআইভি/এইডস প্রতিরোধ ও বৈশ্বিক উষ্ণতা রোধের মতো আন্তর্জাতিক বিষয় মোকাবিলায় 'ক্লিনটন ফাউন্ডেশন' প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০৯ সালে তাকে হাইতির জন্য জাতিসংঘের বিশেষ দূত নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০১০ সালে হাইতির ভূমিকম্পের পর তিনি জর্জ ডব্লিউ. বুশ ও বারাক ওবামার সাথে মিলে 'ক্লিনটন বুশ হাইতি ফান্ড' গড়ে তোলেন। তিনি ডেমোক্র্যাটিক পার্টির রাজনীতিতে সক্রিয় থেকেছেন, তার স্ত্রীর ২০০৮ ও ২০১৬ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রচারণায় অংশ নেন। ডিসেম্বর ২০২৪ সালে জিমি কার্টারের মৃত্যুর পর, তিনি এখন সবচেয়ে আগে দায়িত্ব পালন করা জীবিত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রপতি এবং ২০শ শতকে দায়িত্ব পালন করা একমাত্র জীবিত সাবেক রাষ্ট্রপতি। উইকিপিডিয়া দ্বারা উপলব্ধ